বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ব্লগিং এর অবস্থা ও কৌতুহলী কিছু বিষয় !

আমার ব্লগে ইতোপূর্বে যতগুলো পোষ্ট রয়েছে তার সবগুলো লেখার মধ্যে কোন না কোন কাজের বিষয় রয়েছে। আজ আমি কাজের বাহিরে সম্পূর্ণ ব্যতীক্রম ধর্মী লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আপনারা বলতে পারেন এক ধরনের মজার বিষয় নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আজকের আর্টিকেলটি লিখার পূর্বে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি যে, লেখাটি কারো কারো পক্ষে হতে পারে আবার কারো কারো বিপক্ষেও হতে পারে। কারণ এই বিষয়গুলি আমার তিন বৎসরের ব্লগিং অভীজ্ঞতা ও বাস্তবতা থেকে অর্জন করেছি। আজকের প্রত্যেকটা বিষয় আমার ক্লায়েন্ট ও ভিজিটরদের বিভিন্ন প্রশ্ন থেকে নিয়েছি। অনেকে আমার সাথে ফোনে ও ইমেইলে যোগাযোগ করে যে সকল প্রশ্ন করেছেন সে প্রশ্নের আলোকে আজকের পোষ্টটি সাজিয়েছি। সেই কারনে কেউ হয়ত বলতে পারেন যে, ভাই ব্লগিং ও অনলাইন আয়ের বিষয়ে অনেক কিছু জানতাম না বিধায় আপনার কাছে প্রশ্ন করেছিলাম কিন্তু আপনি বিষয়টি সবার সামনে হাস্যকরভাবে উপস্থাপন করলেন। তবে চিন্তার কোন কারণ নেই আমি আপনাদের কারো নাম প্রকাশ করব না।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ব্লগিং এর অবস্থা ও কৌতুহলী কিছু বিষয় !
আমি পোষ্টের সকল বিষয় এক সাথে বর্ণনা না করে টপিক আকারে আলাদা আলাদাভাবে লিখব। এক সাথে করলে হয়ত সবগুলি বিষয় পড়ে আনন্দ পাবেন না। তবে টপিক আকারে উপস্থাপন করলে মজা নেওয়ার পাশাপাশি ব্লগিং এর বিষয়ে স্বচ্ছ ধারনা নিয়ে আপনার ভূলগুলি সংশোধন করে নিতে পারবেন।

অনলাইন আয়ের বিষয়ঃ

  • অনলাইনে কি আয় করা সম্ভবঃ এটি অত্যান্ত কমন একটি প্রশ্ন। যারা সদ্য ইন্টারনেটে পা রেখেছে তারা কিছু বাংলা ও ইংরেজী সাইট ঘেটে জানতে পারে যে, ফ্রি ল্যান্সিং ও ব্লগিং সহ বিভিন্ন মাধ্যমে অনলাইন হতে আয় করা যায়, কিন্তু কিভাবে আয় করতে হবে বা কিভাবে শুরু করতে হবে সে বিষয়ে নির্দেশনা পায় না। যার জন্য মনে করে এগুলি ফালতু বিষয়। অনলাইন হচ্ছে ফেইসবুকিং ও ইউটিউব ভিডিও দেখার একটি মাধ্যম মাত্র। একজন আমার ব্লগে অনলাইনে আয়ের একটি পোষ্ট দেখে আমাকে সরাসরি ফোনের মাধ্যমে বলছেন, ভাই এটা কি ফালতু বিষয় শেয়ার করছেন। অনলাইনে আবার আয় করার যায় নাকি। অনলাইনের মাধ্যমে শুধুমাত্র বিভিন্ন জিনিস দেখা যায় কিংবা খোজা যায়। এখানে আয় আসবে কোথা থেকে। আমি তখন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে ব্যস্ত আছি বলে ফোন কেঠে দেই। কারণ উনাকে আমি উত্তর দিয়ে কোন কিছু বুঝাতে সক্ষম হব না। এই হচ্ছে বাংলাদেশী ব্লগারদের বেসিক জ্ঞানের অবস্থা।
  • আর্টিকেল ব্লগিং এর ক্ষেত্রে-১ঃ ব্লগিং এর ক্ষেত্রে আমি সবচাইতে বেশী যে প্রশ্নের সম্মুখিন হই সেটি হচ্ছে অনলাইন ইনকাম। আমি এমন অনেক লোক পেয়েছি যিনি আমাকে রাত দুইটার সময় মোবাইলে কল করে জিজ্ঞেস করেছেন, ভাই আমার একটা ব্লগ আছে যেটি সাত দিন হয় শুরু করেছি। আমার এই ব্লগ দিয়ে কিভাবে অনলাইন হতে ইনকাম করব। এত রাতে যদি কেউ আপনাকে কল করে ঘুম ভাঙ্গিয়ে এই প্রশ্ন করে তাহলে আপনি এই প্রশ্নের উত্তরে কি বলবেন? এমন বেকুফি প্রশ্নের জন্য তাকে খাটি বাংলা ভাষায় কিছু গালিগালাজ করার জন্য বলবেন। তবে আন্তরিকতার সাথে ব্লগিং করি বলে মধ্য রাতে এমন প্রশ্নের জবাবেও শান্ত থাকতে হয়েছে।
  • আর্টিকেল ব্লগিং এর ক্ষেত্রে-২ঃ বাংলাদেশে অনেক নবীন ব্লগার রয়েছেন যারা অন্যের ব্লগের কনটেন্ট কপি করে নিজের ব্লগে চালিয়ে দিয়ে অনলাইন হতে আয় করার আশা করেন। আমি এমন একজন ব্লগার পেয়েছি যিনি আমার ব্লগের প্রায় সকল কনটেন্ট কপি করে নিজের ব্লগে চালিয়ে দিয়েছেন। আবার আমাকেই প্রশ্ন করছেন, ভাই আমার একটা ব্লগ আছে, সেই ব্লগ দিয়ে কিভাবে আয় করব দয়াকরে জানাবেন। আমি তখন তার ব্লগের লিংক দেওয়ার জন্য বলি। সে আমাকে লিংক দেয়ার পর ব্লগ চেক করি যে অবস্থা দেখি তাতে অবাক হয়ে কিছুক্ষণ স্তব্দ হয়ে রইলাম। উনার এই কপিবাজ কাজের জন্য আমার কি জবাব দেওয়া উচিত ছিল আপনারাই জানাবেন। আবার আরেকজন ব্লগার পেয়েছি, যিনি বলেছেন ভাই আমি আপনার ব্লগের চিত্রা টেমপ্লেটটি আপনার কাছ থেকে ৮৫০ টাকা দিয়ে কিনে নেব। তারপর যদি আপনার ব্লগে আর্টিকেল কপি করে আমার ব্লগে শেয়ার করি তাহলে কি গুগল এ্যাডসেন্স পাব বা অনলাইন হতে কি আয় করতে পারব। এই প্রশ্নের উত্তরটাও আপনাদের কাছে রেখে দিলাম। 
  • YouTube আয়ের ক্ষেত্রেঃ ইউটিউব হচ্ছে অনলাইন থেকে ভিডিও দেখার অত্যান্ত জনপ্রিয় একটা মাধ্যম সেটা বর্তমানে অজপাড়া গ্রাম থেকে শুরু করে সবাই জানে। তবে YouTube এর মাধ্যমে যে আয় করা যায় সেই বিষয় এখনো সবার কাছে বোধগম্য বা বিশ্বাসযোগ্য নয়। তবে সম্প্রতি ইউটিউবে অনেক ভালমানের বাংলা টিউটোরিয়াল পাওয়া যাচ্ছে এবং সহজে এ্যাডসেন্স অনুমোদন পাওয়া যাচ্ছে বলে অনেকে বিশ্বাস করছে যে, অনলাইন হতে ইউটিউবের মাধ্যমে ইনকাম করা যায়। তবে এখনো সব বাংলাদেশী ইউটিউবারদের জন্য ইউটিউব মনিটাইজেশন সাপোর্ট হচ্ছে না বিধায় অনেক ধরনের প্রশ্নের সম্মুখিন হতে হয়। অনেকে বলেন ভাই অমুকের ইউটিউব চ্যানেলে দেখলাম লোকেশন বাংদেশ দেওয়া আছে কিন্তু গুগল এ্যাডসেন্স এর বিজ্ঞাপন শো করছে, আমার চ্যানেল মনিটাইজেশন হচ্ছে না কেন? আবারও অনেকে বিভিন্ন রকম উল্ঠা পাল্ঠা প্রশ্ন করছেন যে, ভাই আমি যদি ইউটিউব থেকে ভিডিও ডাউনলোড করে কিছুটা পরিবর্তন করে আমার চ্যানেলে আপলোড করি তাহলে কি গুগল এ্যাডসেন্স অনুমোদন করবে। এই প্রশ্নগুলির উত্তর আমি নিজে না দিয়ে আপাতত আপনাদের কাছে রেখে দিচ্ছি। তবে আপনার একান্ত জানার প্রয়োজন হলে কমেন্ট করে আমাদের নিকট হতে জেনে নিতে পারেন।
  • গুগল এ্যাডসেন্স আয়ের ক্ষেত্রেঃ বাংলাদেশী ব্লগারদের জন্য গুগল এ্যাডসেন্স বিশাল বড় একটা বিষয়। পূর্বে অনেকে বাংলা ভাষায় ব্লগিং না করে গুগল এ্যাডসেন্স পাওয়ার জন্য অন্যের ব্লগ হতে আর্টিকেল কপি করি ইংরেজী ভাষায় ব্লগিং করে গেছেন। তাদের মূখ্য উদ্দেশ্য ছিল গুগল এ্যাডসেন্স হতে টাকা আয় করা। ব্লগিং করে খ্যাতি অর্জন করা বা নিজেকে অনলাইনে উপস্থাপন করার মত কোন লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য ছিল না। অন্যের ব্লগের আর্টিকেল কপি করে কেউ আদৌ গুগল এ্যাডসেন্স পায়নি এবং ভবিষ্যতেও পাবে না। যার কারণে বাংলায় ব্লগিং না করে ইংলিশ কপিবাজ ব্লগার গুগল এ্যাডসেন্স অনুমোদন না পেয়ে এক বছরের মধ্যেই ব্লগিং মার্কেট থেকে ঝরে পড়ে গেছে। বর্তমানে বাংলা ভাষায় এ্যাডসেন্স অনুমোদন করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সে জন্য সম্প্রতি বাংলা আর্টিকেল কপি করার প্রবনতা আবারও ব্যাপাক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া কিছু সুবিধাবাদি ব্লগার রয়েছেন যারা ইংরেজী ব্লগ থেকে এ্যাডসেন্স অনুমোদন না পেয়ে এখন বাংলা ভাষায় ব্লগিং শুরু করে দিয়েছেন। এ্যাডসেন্স বাংলা ভাষা সাপোর্ট করার কারনে ভবিষ্যতে বাংলা ভাষার ব্লগ অধিক হাকে বৃদ্ধি পেতে থাকবে। সেই সাথে বাংলা ব্লগের কম্পিটিশনও বাড়তে থাকবে। যারা পূর্বে বাংলা আর্টিকেল কপি করে ভিজিটর পেয়েছেন তারা সেই সুবিধা অচিরেই পাবেন না। কাজেই এখন থেকে আপনি যে বিষয়ে ভাল জানেন সেটা দিয়ে ব্লগিং শুরু করেন। আরেকটা বিষয় না বল্লেই নয়, আপনি অযথাই অন্যের কনটেন্ট কপি করে গুগল এ্যাডসেন্স এর কাছে বাংলা ভাষাকে ছোট করবেন না।
  • এ্যাডসেন্স বিজ্ঞাপন ব্যবহারের ক্ষেত্রেঃ গুগল এ্যাডসেন্স বিজ্ঞাপন ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনেকে মনেকরেন যে, কয়েকজন মিলে গ্রুপিং করে বিভিন্ন কম্পিউটার থেকে আইপি এড্রেস পরিবর্তন করে বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক করলে আয় বৃদ্ধি পাবে। বেশ কয়েকজন আমাকে ফোন করে এই বিষয়ে প্রশ্ন পর্যন্ত করেছিলেন। আপনি নিজেকে যতটা চালাক মনে করছেন গুগল তার চাইতেও তিনগুল চালাক থেকে কাউকে গুগল এ্যাডসেন্স অনুমোদন দেয়। এই কাজ করে নিজের কষ্টে অর্জিত এ্যাডসেন্স একাউন্ট ব্যান করতে যাবেন না। এ্যাডসেন্স বিজ্ঞাপন হতে আয়ের কথা চিন্তা না করে নিয়মিতভাবে ভালমানের কনটেন্ট শেয়ার করে যান। তাতেকরে ভিজিটর বাড়বে, ব্লগের র‌্যাংক বাড়বে এবং এ্যাডসেন্স আয়ও বাড়বে। শুধু শুধু কাজে মনোযোগ না দিয়ে টাকা কখন পাবেন, আয় কখন বৃদ্ধি পাবে এবং টাকা কিভাবে উত্তোলন করব এ সব বিষয় না ভেবে কাজ চালিয়ে যান। তবেই সফলতা আপনার হাতে ধরা দেবে।

ব্লগিং কি এবং কিভাবে শুরু করব?

  • ব্লগার বা ব্লগিং কিঃ এখনো বাংলাদেশে অনেক লোক রয়েছেন যারা ব্লগার বলতে ধর্ম বিরোধী ও নাস্তিক ব্যক্তিদের বুঝে থাকেন। অনেক অল্প শিক্ষিত লোক আছে যাদের ধর্মের ব্যাপারে খুব কঠোরপন্থি মনোভাব রয়েছে। তারা যদি শুনে আপনি একজন ব্লগার তাহলে আপনাকে বিভিন্ন খারাপ কথা বলতে কিংবা মারতেও দ্বিধাবোধ করবে না। যার জন্য আমি নিজেকে সবার সামনে ব্লগার হিসেবে পরিচয় দিতে সাহস পাই না। এই ধরনের মনোভাব থেকে বাংলাদেশের লোকজন বেরিয়ে আসতে পারবে কি না তা এখনো সন্দিহান। অথচ ব্লগার বলতে সেই ব্যক্তিকে বুঝায় যিনি অনলাইনে বিভিন্ন বিষয় লিখে থাকেন। যদি ঐ ব্যক্তি অনলাইনে না লিখে বই আকারে লিখতেন তাহলে তিনি লেখক হিসেবে গর্বের সাহিত বলতে পারতেন। সাধারণত ব্লগ বলতে অনলাইন ডায়রীকে বুঝানো হয়ে থাকে। কেউ যদি তার নিত্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলি অনলাইনে লিখে থাকেন তাহলে তিনিও একজন ব্লগার হিসেবে গন্য হবেন।
  • কিভাবে ব্লগিং শুরু করবঃ এটাও অত্যান্ত কমন একটি প্রশ্ন। আমি কিভাবে ব্লগিং শুরু করব, ওয়ার্ডপ্রেস নাকি গুগল ব্লগার দিয়ে ব্লগিং শুরু করব। অনেকে আবার বলবে গুগল ব্লগার ভালো না, এর চাইতে ওয়ার্ডপ্রেস অনেক ভালো। আপনি ব্লগিং সম্পর্কে ভালভাবে কিছুই জানেন না অথচ কোন প্লাটফর্ম ব্যবহার করবেন সেটা নিয়ে মাথা ঘামানোর কোন যুক্তি আছে বলে আমি মনে করি না। তবে আপনি যদি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য ওয়েবসাইট বা ব্লগ চালু করতে চান, তাহলে সেটা হবে আলাদা বিষয়। ব্যক্তিগতভাবে ব্লগিং করতে চাইলে আমি গুগল ব্লগার বেছে নেওয়ার জন্য বলব। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য ওয়েবসাইট ‍খুলতে চাইলে বা দীর্ঘ মেয়াদী প্লান থাকলে এবং আপনার ওয়েব ডিজাইন সম্পর্কে অভীজ্ঞতা থাকলে ওয়ার্ডপ্রেস নিয়ে শুরু করবেন। আমরা ইতোপূর্বে আমাদের ব্লগে “গুগল ব্লগার নাকি ওয়ার্ডপ্রেস” শিরোনামে দুটি পোষ্ট শেয়ার করেছি। পোষ্ট দুটি পড়লে বিস্তারিত জেনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
  • কি বিষয়ে ব্লগিং করবঃ অনেকে বলে ভাই নতুন একটি ব্লগ খুলব ভাবছি কিন্তু কি কি বিষয় নিয়ে ব্লগিং শুরু করব সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। দয়াকরে করে কেউ কি জানাবেন যে, কোন টপিক নিয়ে কাজ শুরু করলে ভালো ট্রাফিক, গুগল এ্যাডসেন্স ও পর্যাপ্ত টাকা আয় করতে পারব। ঠিক এই ধরনের এক প্রশ্নের উত্তরে আমি একজনকে বলেছিলাম ভাই আপনাকে আমি যে কোন একটি বিষয় বল্লেই কি আপনি সেই বিষয়ে ব্লগিং চালিয়ে যেতে পারবেন। আপনি কি সব বিষয়ে অভীজ্ঞতা সম্পন্ন লোক বা সর্ব জানতা ব্যক্তি। সেই ব্যক্তি উত্তরে আমাকে বিভিন্ন অকথ্য ভাষায় কথা শুনিয়েছিল। পরবর্তীতে সে বলেছিল পারলে কোন বিষয়ে সাজেস্ট করেন না পারলে বক বক বাধ দেন। পরে বাধ্য হয়ে বলেছিলাম ইন্সুরেন্স বিষয়ে লিখলে প্রচুর পরিমানে ভিজিটর পবেন এবং গুগল এ্যাডসেন্স এর ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলির ক্লিক রেট অনেক বেশী। এই বিষয়ে ব্লগিং করলে আপনার দুটোই লাভ হবে। আপনি কি সেই বিষয়ে ব্লগিং করতে পারবেন? জবাবে সে দাঁত কেলিয়ে বলেছিল এই টপিক নিয়ে কাজ করা সম্ভব না অন্য বিষয় সাজেস্ট করেন। তখন সে নিজের ভূল নিজেই বুঝতে পেরেছিল। টপিক নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমি আপনাদের বলব আপনি যে বিষয়ে কাজ করতে আগ্রহ পান ও যে বিষয়ে আপনার পর্যাপ্ত অভীজ্ঞতা রয়েছে কেবলমাত্র সেই বিষয় নিয়ে কাজ শুরু করেন। প্রথম অবস্থায় ভিজিটর কম পেলেও কিছুটা দীর্ঘ সময় নিয়ে ব্লগিং করলে অবশ্যয় ভিজিটর ও সফলতা দুটোই পাবেন।

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) এর ক্ষেত্রেঃ

  • ভাইয়া এসইও কিঃ এই বিষয়টা অধিকাংশ ব্লগারদের সামনে এলেই মনেকরে এটা বিশাল বড় একটা বিষয়। আমার পক্ষে ব্লগের বা ওয়েবসাইটের এসইও করা কোনভাবেই সম্ভব না। সাধারণ একটা বিষয়কে পাহাড় এক পাশ থেকে ঠেলে অন্য পাশে নিয়ে যাওয়ার মত কঠিন কাজে পরিনত করে দেয়। বাংলাদেশী অনলাইন মার্কেটারদের এসইও বিষয়ে যথ অজ্ঞতা দেখেছি অনলাইনে অন্য কোন বিষয়ে ততটা অজ্ঞতা দেখিনি। অনেকে সোজাসোজি প্রশ্ন করে বলেন যে, এসইও কি, কেন এসইও করতে হয় বা এসইও করলে কি লাভ হবে। আবার কিছু লোক মনেকরে শুধুমাত্র এসইও করলে ব্লগে ভালমানের আর্টিকেল না থাকলেও পর্যাপ্ত ট্রাফিক পাওয়া যাবে। এই ধরনের চিন্তা ভাবনা সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তন করা উচিত। এসইও এর ক্ষেত্রে আর্টিকেল হচ্ছে অল-ইন-অল। ভালমানের আর্টিকেল ছাড়া এসইও এর কথা চিন্তাই করা যায় না। 
  • আমার ব্লগটা এসইও করে দেবেনঃ আমার ব্লগের ভিজিটরদের কাছে এই প্রশ্নটা শুনতে শুনতে বিরক্ত হয়েগেছি। কিছু লোক সোজাসোজি বলবে যে, ভাই আমার ব্লগে এসইও করে প্রতিদিন দশ হাজার ভিজিটর এনে দিতে পারবেন কি না এবং এর জন্য আপনাকে কত টাকা দিতে হবে। আবার অনেকে প্রশ্ন করেন আপনাকে তিনশত টাকা দেব আমার ব্লগটা পূর্ণাঙ্গ এসইও করে দেবেন। এই দুটি প্রশ্নের উত্তর আমি ইচ্ছে করে আপনাদের দিতে চাইছি না। সম্ভব হলে আপনারা কমেন্টের মাধ্যমে সবাইকে উত্তরটা জানিয়ে দেবেন।
  • এসইও কোথা থেকে শিখতে পারবঃ সাধারণত যাদের শিখার আগ্রহ আছে তারাই এই প্রশ্নটি করে থাকেন। এই প্রশ্নের সঠিক সমাধান হবে আমার জানামতে পূর্ণাঙ্গভাবে এসইও শিখানোর মত ভালো প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে আদৌ খুব কম আছে। তবে আপনি যাচাই বাছাই করে মোটামোটি ভালমানের যে কোন প্রতিষ্ঠান থেকে এসইও এর বেসিক জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন। পরবর্তীতে আপনার প্রচন্ড আগ্রহ থাকলে ইন্টারনেট হতে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এসইও সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হবেন। কাজেই এটাকে কঠিন কাজ না ভেবে সহজভাবে নিয়ে শেখার চেষ্টা করলে একদিন আপনি একজন এসইও কনসালটেন্ট হয়ে বিভিন্ন আইটি কোম্পানির এসইও অপটিমাইজার হিসেবে কাজ করতে পারবেন।
উপসংহারঃ বাংলাদেশের ব্লগিং এর বাস্তব অবস্থার প্রেক্ষিতে কিছু সমস্যার বিষয়ে আপনাদের সাথে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এই বিষয়গুলি ছাড়াও বাংলা কনটেন্ট পাবলিশারদের আরো অনেক ধরনের সমস্যা রয়েছে যেগুলি সম্পর্কে আমি অবিরত লিখে যেতে পারব। তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছাড়া অন্য বিষয়ে লিখে আপনাদের বিরক্তির কারণ হতে চাইছি না বিধায় আজকের মত এখানে বন্ধ করে দিলাম। আমার পোষ্ট থেকে যদি নূন্যতম কিছু জেনে থাকেন তবে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আর যদি কোন ভূল বিষয় বর্ণনা করে থাকি সে বিষয়ে আমাদের জানাতে পারেন। আমরা আপনার মতামত সাদরে নিয়ে ভবিষ্যতে সংশোধনের সর্বাত্মক চেষ্টা করব, ইনশাআল্লাহ্।
Disqus Comments

Popular Posts